দেশে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ভোটার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ দুটি দলের একটি দল নির্বাচনের বাহিরে থাকলে তা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে না। সেই নির্বাচনে জনগণের মতামতের সঠিক প্রতিফলন আসে না। এই বাস্তবতা মেনে নিয়ে আমাদের নির্বাচনে আসতে হবে।
গতকাল (২৩ ডিসেম্বর) রাতে নগরীর সেনপাড়াস্থ স্কাইভিউ বাসভবনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তার দাবি, কাউকে বাদ দিয়ে সহজে জয়লাভ করা নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না।
জিএম কাদের বলেন, অবাধ নির্বাচন তাকেই বলা যাবে যেটিতে ভোটাররা অবাধে ভোট দিতে পারবেন এবং প্রার্থীরা বাধাহীনভাবে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন। বাধার সৃষ্টি করে প্রতিযোগী কমিয়ে আমি কিছু হয়ে গেলাম- এটি অবাধ নির্বাচন হতে পারে না। আওয়ামী লীগ সেজন্য বড় ধরনের আঘাত পেয়েছে। তাদের যথাযোগ্যভাবে তা জনগণ দিয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ এটি করতে চাইলে তারাও এ ধরনের আঘাতপ্রাপ্ত হবে। আমাদের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, নির্বাচন আমরাও চাচ্ছি। কিন্তু নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। বর্তমানে আমাদের বিভিন্নভাবে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের প্রেসের বিষয়গুলো কার্টেল করা হচ্ছে। সাংবিধানিক অধিকার অনেক ক্ষেত্রে আমরা পাচ্ছি না। আমাদের স্বাধীনতভাবে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছাড়া যে উদ্দেশ্যে নির্বাচন দেওয়া হচ্ছে তার লক্ষ্য পূরণ হবে না।
তিনি আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রচলন করা হয়েছিল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে। সরকারের থেকে দল হবে, সেই দল নির্বাচন করলে তখন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে না। এর জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়েছিল। যেন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করা সম্ভব হয়। এখন উনারা যদি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দল করেন তবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বেসিক কনসেপ্ট ব্যহত হবে। সেই সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি কোনও দলের লোক হয় এবং আওয়ামী লীগের আমলে যা হয়েছে সেটির যদি পূণরাবৃত্তি ঘটে তবে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
জাপা চেয়ারম্যান দাবি করেন, আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার আসুক। বর্তমান সরকারের পক্ষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে সংস্কার করা সম্ভব হবে না। পরবর্তীতে রাজনৈতিক দল দেশের স্বার্থে সবকিছু ঠিক করবে। এভাবে গেলে সকলের জন্য ভালো হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ইয়াসির আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জেলা যুবসংহতির সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিনসহ অন্যরা।